






























পাহাড় ধস ও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার সাথে ইউনিয়ন গুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় লক্ষাধিক লোক পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। লামা পৌরসভার ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় এক হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ফাঁসিয়াখালী ও আজিজনগর ইউনিয়নের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নেয়। আবার অনেকে গবাদিপশুসহ পাহাড়ের ঢালু ও উচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, পাহাড়ধস আর বন্যার পানিতে কৃষকদের বীজতলা ও লাগানো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লামা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সানজিদা বিনতে সালাম জানান, এবার লামায় ৩ হাজার ২৭১ হেক্টর আমন এবং ২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে গত তিনদিনের পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়েগেছে। একইভাবে গ্রীষ্মকালিন সবজি ও বিভিন্ন ফল বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে লামা বাজার ব্যবসায়ী উজ্জ্বল বড়ুয়া জানায়, পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে লামা বাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দোকানপাট পানির নিচে ডুবে গেছে। একদিকে লকডাউন ও অপরদিকে হঠাৎ বন্যায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, বন্যা ও পাহাড় ধসের ঘটনায় পৌরসভায় তিন শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা পরিবারের মাঝে ত্রান সামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ও ৫নং বড় ছনখোলা ও বগাইছড়ি খাল। ব্যাপক ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ব্রিজ, রাস্তা ও বসতবাড়ি। বর্তমানে অতিবৃষ্টির ফলে প্রায় ২০টি পরিবার হুমকির মধ্যে। আব্দু ছালাম ও মনজুর আলম এর দুইটি পরিবারের ঘর খালে নিয়ে গেছে। আরো প্রায় ২০টি পরিবার ঝুঁকিতে আছে এখনি মেরামতের উদ্যোগ না নিলে ব্রিজটি ভেঙ্গে যেতে পারে। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি লামার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
লামা উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যা ও পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য জরুরী ভিত্তিতে লামা পৌরসভার জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল এবং ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের জন্য ৩ মেট্রিক টন চাল এবং ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল জানান, উপজেলার বিভিন্নস্থানে পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি আংশিক এবং পূর্ণাঙ্গ বিধ্বস্ত হয়েছে। ধসে গেছে গ্রামীন রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও কালভার্ট।