আজঃ শনি, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

চকলেট খাওয়ার উপকারীতা এবং চকলেট রেসিপি

লিখেছেনঃ সুমাইয়া পঠিত 1284 বার
চকলেট খাওয়ার উপকারীতা এবং চকলেট রেসিপি
চকলেট খাওয়ার উপকারীতা এবং চকলেট রেসিপি


চকলেট নিয়ে আমাদের নানান মন্দোভাবের শেষ নেই।বেশীর ভাগ মানুষের ধারনা চকলেট শুধু আমাদের দেহে ক্ষতি করে। আসলে তা নয়।চকলেট আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারও করে।আসুন জেনে নেই চকলেট নিয়ে যত কথোপকথন

প্রথমে আমরা জেনে নেই চকলেট কী?

চকলেট একটি পক্রিয়াজাত,সাধারনত মিষ্টি জাতীয় খাবার যা কিনা মূলত গ্রীষ্মমন্ডলীয় Theobroma coco নামক গাছের বীজ থেকে তৈরি করা হয়।কোকো গাছের বীজ তীব্র তিতা স্বাদযুক্ত হয় এবং পরে চিনি যুক্ত করে মিষ্টি স্বাদ আনা হয়।

বাজারে অনেক ধরনের চকলেট পাওয়া যায় কিছু কিছু মিষ্টি স্বাদ যুক্ত আবার কিছু কুছু তিক্ত স্বাদ যুক্ত।পছন্দের তালিকায় শীর্ষে মিষ্টি স্বাদ যুক্ত কোকো চকলেট গুলো যা বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়রাও পছন্দ করে।চকলেটের এমনই গুন যে ভবিষ্যতে ডাক্তাররা নিয়মিত চকলেট খাওয়ার প্রেসকিপশন দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

নতুন একটা পরীক্ষায় দেখা যায় এটা হতেই পারে গবেষকরা ডায়াবেটিস এবং হার্ট ডিজিজ কমানোর জন্য প্রতিদিন কিছু পরিমাণ চকলেট খাওয়ার পরামর্শ দেন।চকলেট এমনিতে অনেকেরই প্রিয় খাবার কিন্তু চকলেট যেমন উপকারিতে রয়েছে তেমন অতিরিক্ত চকলেট খাওয়া স্বাস্থ্যেরপক্ষে ক্ষতির কারন ও হতে পারে।

কারন এতে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট ও চিনি রয়েছে।কিন্তু বিশেষ করে যখন ডার্ক চকলেটের কথা আসে তখন এই নিয়ম অনেকটাই শিথিলযোগ্য।ডার্ক চকলেটে কোকোয়ার পরিমাণ সর্বাধিক থাকে যার মানে হলো এতে রয়েছে অনেক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

বিশেষ করে ফ্ল্যাভিনয়েড যা আমাদের শরীরের বিশেষ কিছু কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।একটা চকলেট নিয়মিত চকলেট গ্রহনকারীদের ভিতরে জরিপ চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।পরিক্ষক দলের পর্যবেক্ষনের বিষয় ছিল যে নিয়মিত চকলেট খাওয়া ইনসুলিন রেজিসটেন্স এর সাথে সম্পর্কযুক্ত কি না যেখানে শরীরের কোষগুলো ইনসুলিন হরমোন সাড়া দেয় না বা টাইপ 2 ডায়াবেটিস ও হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।এ ছাড়া তারা লিভার এনজাইয়ের উপর চকলেটের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখেন যা দিয়ে লিভার বা কলিজা ঠিক মতো কাজ করছে কি না বোঝা যায়।

চকলেট ছোট বড় সবারি পছন্দ।কিন্তু এই চকলেট খাওয়া নিয়ে রয়েছে নানা বিধি নিষেধ।অনেকে মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে চকলেট খেতে চায় না।অথচ চকলেটে রয়েছে নানা উপকারী দিক।হোয়াইট চকলেট এর থেকে ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য উপকার বেশী।হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে পাশাপাশি কোলেস্টেরল হ্রাস করে।

চকলেটে কোন কোন ভিটামিন থাকে?

আমরা বাজার থেকে সাধারনত যে সমস্ত চকলেট কিনি তারমূল উপাধান কোকো এবং দুধ,তাই চকলেট অনেক গুরুত্বপূর্ন ভিটামিন উপস্থিত থাকে।চকলেটের মূল কোকো অংশ ভিটামিন-ই,ভিটামিন-কে সহ ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স থাকে।বি কমপ্লেক্স এর মধ্যে বি-১,বি-২,বি-৩,বি-৫,বি-১১ থাকে।চকলেটে দুধ থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন-এ,বিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন-ডি থাকে।ফল বা বাদামযুক্ত চকলেট থেকে আমরা অতিরিক্ত ভাবে ফল বা বাদামে উপস্থিত ভিটামিন পেয়ে থাকি।

চকলেট ক্যালরিঃ

কোকো পাউডার একটি নিন্ম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য এবং অতি অল্প পরিমানে আমরা এটি খাই।তাই এটি আমাদের প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার উপর তেমন কোন প্রভাব ফেলে না।এক চা-চামচ কোকো পাউডারে ১২ ক্যালরি থাকে।যেখানে প্রতিদিন সাধারনত ২০০ ক্যালরি প্রয়োজন সেখানে চকলেট দিয়ে এর খাটতি পূরন খুবই সামান্য।চকলেট তেতো স্বাদ দূর করার জন্য চিনি যুক্ত করা হয় এতে হালকা পরিমান ক্যালরি পরিমান বাড়ে।চিনিতে প্রায় ১৬ ক্যালরি থাকে।

বাজার থেকে কেনার ঝামেলা ছাড়া ঘরে বসেই চকলেট বানিয়ে নিতে পারেন।

চকলেট তৈরি করতে লাগবে

উপকরণঃ

  1. বাটার/খাবার নারকেল তেল(চুলে যেটা দেয় ওটা বাদে,বাজারে কিনতে পাওয় যায়)/ঘি ৫ টেবিল চামচ
  2. চিনি ৩ টেবিল চামচ
  3. গুড়ো দুধ ২ টেবিল চামচ
  4. কোকো পাউডার ১ টেবিল চামচ

প্রস্তুত প্রনালীঃ

একটি পাত্রে পানি দিয়ে ফুটাতে হবে।ফুটন্ত পানিতে চুলার আঁচ কমিয়ে একটি স্টিলের অথবা তাপ সহ্য করতে পারে এমন কাঁচের বাটি রাখতে হবে।এরপর বাটিতে বাটার/নারিকেল তেল/ঘি দিতে হবে।এরপর চিনি দিয়ে নাড়তে হবে যতক্ষন না চিনিটা গলে যাচ্ছে।এরপর গুড়ো দুধ ও কোকো পাউডার দিয়ে নাড়তে হবে।হোয়াইট চকলেট এর জন্য শুধু গুড়ো দুধ দিতে হবে এবং ডার্ক চকলেট এর জন্য কোকো পাউডার যোগ করতে হবে।মিশ্রনটি ঘন হয়ে গেলে চকলেট মোল্ড অথবা আপনাদের ইচ্ছে মতো করে ফ্রিজ এ রেখে দিন শক্ত হয়ে গেলে আপনার চকলেট এবার খাওয়ার জন্য তৈরি।

ডার্ক চকলেটের সমস্ত স্বাস্থ্য গুনাগুন পেতে হলে কমপক্ষে ৭০-৮০% কোকো থাকতে হবে এই চকলেটে।

ডার্ক চকলেটের ভালো গুনাগুনঃ

  1. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্বি করে।
  2. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
  3. হার্ট সুস্থ রাখে।
  4. রক্তে শর্করা পরিমাণ এবং ইনসুলিনের নির্ভরশীলতা ঠিক রাখে।
  5. স্ট্রোক থেকে বাঁচায়।
  6. মাইগ্রেনের ব্যাথার হার কমায়।
  7. অস্টি ওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় হয়ে যাওয়া রোগ থেকে বাঁচায়।
  8. উচ্চরক্তচাপ কমায়।
  9. মাথায় টাক পড়া রোগ,ঠান্ডা লাগা এবং মৃগীরোগের আক্রমন কমায়।
  10. রজঃস্রাব পূর্ব লক্ষন থেকে দূর করে।

সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন আমাদের চকলেট খাওয়া প্রয়োজন।