আজঃ শনি, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

১২ নভেম্বর ১৯৭০ ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। মনে পরে সেই ভয়াল দিনের কথা ?

লিখেছেনঃ মোঃ জাবেদ আলি পঠিত 463 বার
১২ নভেম্বর ১৯৭০ ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। মনে পরে সেই ভয়াল দিনের কথা ?
১২ নভেম্বর ১৯৭০ ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। মনে পরে সেই ভয়াল দিনের কথা ?


সেই দিনটি ছিল ১২, নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় "ভোলা"। রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে মূহুর্তের মধ্যে লন্ডভন্ড করে দেয় বাংলার দক্ষিণ উপকুল।

৭ নভেম্বর, ১৯৭০ সর্বোচ্চ গতি ৩ মিনিট স্থিতি, ১৮৫ কিমি/ঘন্টা (১১৫ মাইল/ঘন্টা), ১ মিনিট স্থিতি, ২০৫ কি.মি. ঘন্টা (১৩০ মাইল/ঘন্টা)। সর্বনিম্ন চাপ ৯৬৬ মিলিবার (hPa) ২৮.৫৩ ইঞ্চি পারদস্তম্ভ। হতাহত ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ (ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণঘাতীর রেকর্ড) ক্ষয়ক্ষতি $৮৬.৪০ মিলিয়ন ১৯৭০$ ।

প্রভাবিত অঞ্চল ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৭০ এ উত্তর ভারত মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড় ঋতু এর অংশ ১৯৭০ সালের ভোলা ঘূর্ণিঝড় (Bhola Cyclone) ছিল একটি শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়

যা ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ এর ) দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে।এ পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্ণিঝড় সমূহের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এবং এটি সর্বকালের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতম প্রাকৃতিক দূর্যোগের একটি। এ ঝড়ের কারণে প্রায় ৫ লাখ ব্যক্তি প্রাণ হারায়।

যার অধিকাংশই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ সমুদ্র সমতলের ভূমিতে জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা যান। এটি ১৯৭০ এর উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের ৬ষ্ঠ ঘূর্ণিঝড় এবং মৌসুমের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিল। এটি সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি ৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ছিল।

ঝড়ের পথ

ঘূর্ণিঝড় টি বঙ্গোপসাগরে ৮ নভেম্বর সৃষ্ট হয় এবং ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে হতে এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১১ নভেম্বর এটির গতিবেগ সর্বোচ্চ ঘন্টায় ১৮৫ কি.মি. (১১৫ মাইল) এ পৌছায় এবং সে রাতেই তা বংলাদেশের ভোলা উপকূলে আঘাত হানে। জলোচ্ছ্বাসের কারনে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপ সমুহ প্লাবিত হয়।এতে ঐসব এলাকার বাড়িঘর, গ্রাম ও শস্যসহ সবকিছু স্রোতে তলিয়ে যায়।সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিল ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলা ।

সেখানে ১৬৭০০০ জন অধিবাসীর মধ্যে ৭৭০০০ জনই (৪৬%) প্রাণ হারান। আজও সেই ভয়াল দিনের বেঁচে থাকা মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে । আজও সেইদিনের কথা মনে পড়লে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। রাতে আর ঘুম আসেনা, গা শিউরে ওঠে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে এই দোআ করি তিনি যেনো সেই দুর্যোগে নিহত মানুষদের জান্নাত দান করেন। (আমিন)

ধন্যবাদ : পারভেজ অহমেদ পলাশ, আবহওয়া গবেষক।